তারহাত ধরে, তাকে নিয়ে বাকীটা পথ হাঁটতে পারবো না, তা কি করে হয়? আমি খুব সহজভাবেই তার হাতটা নিজের হাতে চেপে ধরলাম। তারপর বললাম, চলো!
নদীর কিনারায় এসে, কেয়া আপা খুব উচ্ছল প্রাণবন্ত হয়েই নদীর পানিতে ছুটাছুটি করতে থাকলো। দেখাদেখি আমিও খানিকটা করলাম।তারপর, ক্লান্ত হয়েই একটা গাছের গুড়িতে গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসলাম। কেয়া আপা যেনো বিরক্তি নিয়েইআরো কিছুটা সময় একা একা নদীর পানিতে ছুটা ছুটি করে, একটা কাশফুলের ডাটা ভেঙ্গে হাতে নিয়ে আমার পাশেই গা ঘেষে বসলো।
কেয়া আপা আমার গা ঘেষে বসবে, এ আর তেমন কি? অথচ, আমার গা টা হঠাৎই যেনো, এক ধরনের শিহরনে ভরে উঠলো। অথচ, আমি সেটা কেয়া আপাকে বুঝতে দিলাম না। কেয়া আপা তার ডান হাতের কনুইটা আমার ঘাড়ের উপর রেখে, থুতনিটা ঠিক তার নিজের হাতের কব্জিতে ঠেকালো হঠাৎই। আমার গাল তার গালে ছুই ছুই করছিলো। আমি বুঝলামনা, কেনো যেনো আমার দেহে আরো বেশী শিহরণ জেগে উঠতে থাকলো। সেটাও আমি প্রচন্ড রকমে সহ্য করে নিলাম।
কেয়া আপা হঠাৎই রাগ করে উঠে দাঁড়ালো। তারপর বললো, চলো,বাড়ী ফিরে যাই!
আমি বললাম, এই তো এলাম! একটু বিশ্রাম করি!
কেয়া আপা খুব কান্না জড়িত গলায় বললো, নাহ, ভালো লাগছে না।
আমি দেখলাম, কেয়া আপার চোখ থেকে গাল বেয়ে জল গড়িয়ে পরছে।
আমিও উঠে দাঁড়িয়ে বললাম, কেয়া আপা, তোমার চোখে পানি?
কেয়া আপা তার ওড়নাটা দিয়ে, চোখের জল মুছে বললো, তোমাকে যতটা রোমান্টিকভেবেছিলাম, ততটা তুমি নও।
আমি অবাক হয়েই বললাম, মানে?
আমি কিছু না বুঝার আগেই, কেয়া আপা হঠাৎই তার দু হাত দিয়ে আমার গাল দুটো চেপে ধরে, তার ঠোট দুটো দিয়ে আমার ঠোট দুটো নিজের ঠোটের ভেতর নিয়ে খানিকটা ক্ষণ কি যেনো করলো, নিজেই বুঝতে পারলাম না। তবে মনে হলো, এমন কোনসুখের ক্ষণ এই জীবনে এই বুঝি, এই প্রথম! আমার দেহের সমস্ত শিরা উপশিরাগুলো তখনকি করছিলো, কিছুই বুঝতে পারলাম না। তবে, মনে হতে থাকলো, আমার ঠোটে, জিভে,মুখের ভেতর অপার্থিব এক সুখের নদী এসে ঢেউ খেলতে লাগলো। আর সেই ঢেউটা আমার সমস্ত দেহেই প্রবাহিত হতে থাকলো।
খানিকটা পর, কেয়া আপাআমার ঠোট যুগল মুক্ত করে, লজ্জিত গলায় বললো, আমাকে ক্ষমা করে দিও।
কেয়া আপার ব্যপারটা কিছুই বুঝলাম না। আমাকে এমন একটা সুখের নদীতে নিয়ে গিয়ে, বাস্তব জীবনের সব কিছু ভুলিয়ে দিয়ে, আবার নিজেই ক্ষমা চাইছে? আমি ফ্যাল ফ্যাল করেই কেয়া আপার মুখের দিকে তাঁকিয়ে রইলামবোকার মতো। অথচ দেখলাম, কেয়া আপা এক ধরনের অপারাধী চেহারাকরে তাঁকিয়ে আছে মাটির দিকে। আমি আমার অবচেতন মন থেকে হঠাৎই বললাম, কেয়া আপা! আবার!
কেয়া আপা ভীরু ভীরু চোখে আমার দিকে তাঁকিয়ে বললো, কি আবার?
আমি খুব সহজভাবেই বলে ফেললাম, এই যে, কিছুক্ষণ আগে যা করলে!
কেয়া আপা মিষ্টি হাসলো। তারপর তার চোখ দুটো বন্ধ করে, মুখটা আমার দিকে বাড়িয়ে ধরে, ঠোট যুগল খানিকটা উঁচু করে ধরলো। আমিও কেমন যেনো অবচেতন মনেই কেয়া আপার চমৎকার ঠোট যুগল নিজের ঠোটের ভেতর পুরে নিলাম। সেভাবে কতক্ষণ ছিলাম জানিনা। হঠাৎই এক রাখাল বালকের ডাকেই চেতন ফিরে পেলাম। শুনলাম, কে যেনো বললো, এইতোমরা এখানে কি করছো?
আমি তখন ভয়ে, কেয়া আপার হাতটা টেনে ধরে, পাগলের মতোই পালাতে থাকলাম বাড়ীর পথে।
No comments:
Post a Comment